৮৮ মিনিট পর্যন্ত বায়ার্ন মিউনিখ ১-০ গোলে এগিয়েই ছিল। সেই ম্যাচটি তারা হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। রিয়াল মাদ্রিদের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় হয়ে গেছে জার্মান ক্লাবটির।
এমন উত্তেজনাপূর্ণ এক ম্যাচ। হার মেনে নেওয়া তো কঠিনই বায়ার্নের জন্য। তার ওপর ইনজুরি টাইমে তাদের এক গোল বাতিল হয়ে যায় অফসাইডের কারণে। যদিও গোলটি কি আসলেই অফসাইড ছিল কিনা, তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। সেই গোলটি হলে টাইব্রেকারে গড়াতো ম্যাচ।
স্বাভাবিকভাবেই রেফারির ওপর খেপে রয়েছেন বায়ার্ন কোচ টমাস টুখেল। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে হারের ম্যাচে রেফারির ওই সিদ্ধান্তকে বিশ্বাসঘাতকতার মতো মনে হচ্ছে তার।
৮৮ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে থাকা বায়ার্নকে স্তব্ধ করে দেন রিয়ালের বদলি খেলোয়াড় হোসেলু। তিন মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে দলকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন তিনি।
পিছিয়ে থাকা বায়ার্ন স্টপেজ টাইমের ১৩তম মিনিটে প্রায় সমতা ফিরিয়েই ফেলেছিল। ম্যাথিউস ডি লিট বল জালে জড়ালেও তার আগেই অফসাইডের বাঁশি বাজিয়ে বসেন সহকারী রেফারি।
বাঁশি বাজলে রিয়ালের ডিফেন্ডাররা থেমে যান এবং ডি লিট বল ঢুকিয়ে দেন জালে। টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখা যায়, সম্ভবত অফসাইডটি হয়নি। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভার) সাহায্য নেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু যেহেতু রেফারির বাঁশিতে খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তাই ভার নেওয়ার সুযোগ ছিল না।
ম্যাচের পর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়ে টিএনটি স্পোর্টসকে টুখেল বলেন, ‘এটা খুব, খুবই বাজে সিদ্ধান্ত এবং নিয়মের বিরুদ্ধে। লাইনসম্যান এবং রেফারির কাছ থেকে একটি বিপর্যয়কর সিদ্ধান্ত ছিল। এটি শেষ পর্যন্ত বিশ্বাসঘাতকতার মতো মনে হচ্ছে।’
বায়ার্ন কোচ যোগ করেন, ‘লাইনসম্যান দুঃখিত বলেছে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না। এভাবে এক মুহূর্তে পতাকা তোলার জন্য… রেফারি দেখেছেন আমরা দ্বিতীয় বলটি পেয়েই শটটি নিয়েছি। এটা হজম করা কঠিন। কিন্তু এমনটাই তো হলো!’
টুখেল জানান, রেফারি সাইমন মারচিনিয়াক এই সিদ্ধান্তের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু ক্ষমা চাইলে আর কী হবে? এমন একটি সিদ্ধান্ত তো বিরাট ক্ষতিই করে দিলো বায়ার্নের।
টুখেল বলেন, ‘দুঃখ প্রকাশ করে এখন কোনো লাভ নেই। সবার সর্বোচ্চটা দিতে হয়েছে, ভুগতে হয়েছে, কোনো ভুল ছাড়াই খেলতে হয়েছে সবাইকে। সুতরাং রেফারিকেও সেই মানের হতে হবে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর অজুহাত দিয়ে কোনো লাভ নেই। আপনি সেরা বলেই মাঠে। শেষ পর্যন্ত মাঠে আপনার কাছে সেরাটা প্রত্যাশা করা আমাদের অধিকার।’
তবে টুখেলের অভিযোগ আমলে নিচ্ছেন না রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি বলেন, ‘মুভটা একেবারেই স্পষ্ট। লাইনসম্যান পতাকা তুলেছে, রেফারি বাঁশি বাজানোর পরই আমরা থেমে গেছি। তারা যদি এটা নিয়ে অভিযোগ করে, আমরা নাচোর বাতিল হওয়া গোলটি নিয়েও অভিযোগ করতে পারি।’
ম্যাচের ৭১ মিনিটে রিয়ালের নাচো গোল করেছিলেন। তখন ভিএআরের মাধ্যমে দেখা যায়, বায়ার্নের জশুয়া কিমিখকে ফেলে দিয়েছিলেন রিয়াল অধিনায়ক। ফাউলের কারণে গোলটি বাতিল করা হয়।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে সফল দল রিয়াল মাদ্রিদ ১৫তম শিরোপার লক্ষ্যে আগামী ১ জুন ওয়েম্বলিতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের মোকাবেলা করবে।