নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের বাড়ি যেন এখন ধ্বংসস্তূপ। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর শামীম ওসমানের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন দুর্বৃত্তরা। স্থানীয়দের ধারণা, তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সরেজমিনে শহরের জামতলা এলাকার শামীম ওসমানের বাড়িতে দেখা যায়, আলিশান জাঁকজমকপূর্ণ বাড়িটি যেন একটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি বাথরুমের হাইকমোড থেকে শুরু করে বিদ্যুতের তার পর্যন্ত নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। বাড়ির আসবাবপত্র বলতে কিছুই নেই। আশপাশ এলাকার মানুষজন এসে ভিড় করছেন ধ্বংসস্তূপ দেখার জন্য।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার (৫ আগস্ট) দিনের কোনো এক ফ্লাইটে শামীম ওসমানের পরিবারের কয়েকজন সদস্য ব্যাংককে পাড়ি জমান। সেখানে কিছুদিন অবস্থান করে তারা দুবাই চলে যেতে পারেন। এছাড়া মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম থাকায় সেখানেও যেতে পারেন।
কয়েকটি সূত্র জানায়, শামীম ওসমানের ধারণা ছিল, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে সামরিক সরকার কিংবা জরুরি অবস্থা জারি হতে পারে। আর সেটা থাকতে পারে শেখ হাসিনার অধীনেই। কিন্তু শেখ হাসিনাকে এত দ্রুত দেশ ছাড়তে হবে তিনি বুঝতে পারেননি। সে কারণেই পরিবারের সঙ্গে তিনি দেশ ছাড়েননি। বেশ কিছুক্ষণ তিনি রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় আত্মগোপন করেন। মগবাজার এলাকায় বিএনপির একজন নেতা, যিনি তার বন্ধু তার বাড়িতেও কিছুক্ষণ ছিলেন বলে জানা গেছে।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশছাড়ার খবরের পরপরই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের জামতলা এলাকায় কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ডুপ্লেক্স বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এসময় তার বাড়ি থেকে আসবাবসহ সবকিছু লুটপাট করা হয়েছে। বাড়ির নিচতলায় আগুন দেওয়া হয়। বিকেল ৫টার দিকে রূপায়ন টাউনের পঞ্চম তলায় শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের জেড এন করপোরেশনের অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
শামীম ওসমানের বাড়ির পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা একরামুল হক বলেন, ‘শামীম ওসমানের এই বাড়িটি দেখে অনেক কিছুই শিক্ষা নেওয়ার আছে। কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। একদিন আগেও যে বাড়িটি জাঁকজমকপূর্ণ ছিল, আজ তা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।’