প্রতিমা চাকমা, জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাঙামাটিতে। বাবা-মার বড় সন্তান তিনি। উচ্চমাধ্যমিকের পর শুকরছরি রাঙ্গামাটি কৃষি ডিপ্লমা কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন প্রতিমা চাকমা।
সংসারের পাশাপাশি প্রতিমা চেষ্টা করেন উদ্যোক্তা হওয়ার। সেই চিন্তা থেকে প্রথমে অফলাইনে গ্রামের কিছু আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তিনি । স্বামীর থেকে নেওয়া তের হাজার টাকা দিয়ে শুরু করা ব্যবসা একসময় বন্ধ করে দিতে হয় তাকে। অভিজ্ঞতা না থাকা ও ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী পণ্য দিতে না পারায় তার অন্যতম কারণ ছিল।
ব্যবসা বন্ধ করে হতাশায় নিমজ্জিত না হয়ে ২০২০ সালে পুনরায় সাড়ে তিন হাজার টকায় অনলাইনে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন প্রতিমা। এরপর ফেসবুক পেজ ‘চেতনা কালেকশন’-এর মাধ্যমে ব্যবসায় ঘুরে দাঁড়ান তিনি। বর্তমানে কাজ করছেন রাঙামাটির ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন ও ইয়ক হাদি, হাদি ওড়না, হোম মেড চুটকি সেমাই, আচার, বিননি চাল, শাড়ি এবং ইয়ক বসানো বিভিন্ন পোশাকের মতো পণ্য নিয়ে।
নিজের উদ্যোগের কথা বলতে গিয়ে প্রতিমা বলেন, ‘ব্যবসার শুরুটা আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল।কেননা আমি আমার কাজকে প্রচার করতে পারতাম না। খুব সংকোচ বোধ করতাম। তাই অনেক বার হাল ছেরে দিয়েছি। কিন্তু ব্যবসা নির্ভর ফেসব্যক গ্রুপ উইতে ( উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম ) সবার অনুপ্রেরণা মূলক পোস্ট দেখে আবারও নতুন করে উৎসাহ নিয়ে শুরু করেছিলাম’।
তিনি আরও বলেন, ‘আজ কাল সবকিছুর দাম বেশি। একজনের উপার্জনে সংসার চলা খুব কষ্ট। যদি নিজের চেষ্টায় একটু পরিবারকে সাহায্য করতে পারি এই ভেবে কাজে নেমে পরি। অপরদিকে অনেক চেষ্টা করেও চাকরির ব্যবস্থা করতে পারি নি। যখন চাকরি হলো না, তখন চিন্তা করি যে পরিমান অর্থ ব্যায় হয়েছে তা দিয়ে ব্যবসা করলে বোধয় ভালো হতো। তাই মনেপ্রাণে এই পরিকল্পনা নিয়ে উদ্যোক্তা জীবন শুরু করি। তবে আমার আজকের এই কাজের মূল ভূমিকায় ছিলেন উই এবং আমার মা। কারন উইর অনুপ্রেরণামূল পোস্ট এবং মাকে ছোট বেলা থেকেই দেখেছি বাবাকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করতে। এই দুটি কারণেই ব্যবসায় আমার এগিয়ে চলা’।
অফলাইনের ব্যাবসায় প্রতিমা হয়ত খুব ভালো করতে পারেনি । কিন্তু অনলাইনে খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করেছেন তিনি। এরফলে ক্রেতাদের কাছে বেশ ভালো পণ্য বিক্রয় করেছেন প্রতিমা। ব্যবসার পুঁজি বাড়াতে পারলে আরও ভালো হবে বলে তিনি মনে করেন। ইতোমধ্যে পিনন হাদির সঙ্গে অনেক নতুন পণ্যেকে তার পেজে যুক্ত করেছেন প্রতিমা।