বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি সলিসিটরদের সংগঠন ‘দ্য সোসাইটি অব ব্রিটিশ বাংলাদেশি সলিসিটরসের ২০২৫-২০২৬ সালের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নির্বাচনে ভোটারদের সরাসরি ভোটে মুহাম্মাদ নুরুল গাফ্ফার প্রেসিডেন্ট ও মুহাম্মাদ মুনশাত হাবিব চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সেক্রেটারি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। সেক্রেটারি পদে সলিসিটর লাভলু কাদেরের নির্বাচন করার কথা থাকলেও শেষ সময়ে এসে তিনি সরে দাঁড়ান।
পূর্ব লন্ডনের রিজেন্টস লেক ভেন্যুতে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলে ভোটগ্রহণ। আগামী দুই বছরের জন্য ২১টি পদের বিপরীতে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী করার কথা থাকলেও শেষ সময়ে শুধু প্রেসিডেন্ট ও জয়েন্ট ট্রেজারার পদে নির্বাচন হয়। অনলাইন ও ব্যালট বাক্সের ভোট গণনা শেষে ঘোষণা করা হয় চূড়ান্ত ফলাফল।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে ১৩৬ ভোট পেয়ে মুহাম্মদ নুরুল গাফফার নির্বাচিত হন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ কামরুল হাসান পেয়েছেন ৬৭ ভোট। অন্যদিকে জয়েন্ট ট্রেজারার পদে ১০৯ ভোট পেয়ে শহীদুল ইসলাম নির্বাচিত হন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মিজানুর রহামান পেয়েছেন ৭৭ ভোট।
নবনির্বাচিত গভর্নিং বডির সদস্যরা হলেন প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ নুরুল গাফফার; ভাইস প্রেসিডেন্ট তাহমিনা কবীর, মো. ইকবাল হোসেন, আব্দুল হালিম সরকার ও কাহার চৌধুরী। জেনারেল সেক্রেটারি মুনসাত হাবিব চৌধুরী। জয়েন্ট সেক্রেটারি ফজলে ইলাহি ও ইমরুল শেখ ইমু। এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল ওয়াহিদ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের। কিন্তু শেষ সময়ে এসে তিনি সরে দাঁড়ান।
অন্যান্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা হচ্ছেন অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মো. সালাহ উদ্দিন সুমন, ট্রেজারার মোহাম্মদ সেলিম, প্রেস অ্যান্ড পাবলিসিটি সেক্রেটারি ফারজানা করিম, কালচারাল অ্যান্ড কমিউনিটি সেক্রেটারি কাজী আশিকুর রহমান। ট্রেনিং ও এডুকেশন সেক্রেটারি ফেরদৌসী কবীর। এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল সাজ্জাদুল ইসলামে। তিনিও শেষ সময়ে এসে সরে দাঁড়ান।
এছাড়াও এহসানুল হক, শাহ মিসবাহুর রহমান, এম এ শাফী, মুহাম্মদ সাঈদ বাকি, সুহেল আহমেদ, আবু নোমান এবং আব্দুর রউফ রুবেল গভর্নিং বডির সদস্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
দ্বিবার্ষিক এই নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাজ বেলায়েত হোসেনের নেতৃত্বে ব্যারিস্টার সাইফুল ইসলাম ও সলিসিটর মাসুদ চৌধুরী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রথম পর্বে সংগঠনের বার্ষিক সাধারণ সভায় বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ফরিদা হাকিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাহাদী হাসানের সঞ্চালনায় বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। বিগত বছরের আয় ব্যয়ের হিসাবসহ আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিদায়ী ট্রেজারার মুনশাত হাবিব চৌধুরী ও জয়েন্ট ট্রেজারার কাহার চৌধুরী।
এসবিবিএস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড এবারের অন্যতম প্রতিপাদ্য। এতে ইয়াং লয়ার অব দ্য ইয়ার হিসেবে সজীব হোসেন, ল’ ফার্ম অব দ্য ইয়ার হিসেবে উইলডান লিগ্যাল সলিসিটরস, লয়ার অব দ্য ইয়ার হিসেবে যৌথভাবে জাবির মিয়া ও ফজলে ইলাহী এবং লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট হিসাবে তৌফিক হোসাইনকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। অ্যাওয়ার্ডের বিচারক প্যানেলে ছিলেন ব্যারিস্টার ইসলাম খান ও জাজ মুহাম্মদ বেলায়েত হোসাইন।
এছাড়া ফেরদৌসী কবীরকে এসবিবিএস প্রেসিডেন্টস অ্যাওয়ার্ড ও জাজ মুহাম্মদ বেলায়েত হোসাইনকে এসবিবিএস অনাররী অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
ব্রিটেনের আইন পেশার বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে পুরো অনুষ্ঠান এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। সলিসিটর সুবের আখতারের উপস্থাপনায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ব্রিটিশ হাইকোর্টের বিচারপতি স্যার আখলাক চৌধুরী, ব্যারিস্টার মোজাম্মেল হোসেন কেসি, ব্যারিস্টার সুলতানা তফাদার কেসি, ব্যারিস্টার জেইন মালিক কেসি, ব্যারিস্টার আনিস রহমান ওবিই, বিচারপতি ইমান আলী, টাওয়ার হ্যমলেটস কাউন্সিলের স্পিকার ব্যারিস্টার সাইফ উদ্দিন খালেদ, সলিসিটর রেগুলেশন অথরিটির শন হিউজ এবং এসবিবিএস প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সহুল আহমেদ মুকু।
আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার নাজির আহমেদ, ব্যারিস্টার শাহাদাত করিম, দেওয়ান মেহেদী, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব সভাপতি জুবায়ের আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ, ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ বিবিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট রফিক হায়দার, ব্যারিস্টার সায়েদ আফজাল জামি, ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া, ব্যারিস্টার মাসুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাম উদ্দিন, ফকরুল ইসলাম এবং অ্যাকাউন্ট্যান্ট রফিক আহমেদসহ কমিউনিটি ব্যক্তিত্বরা।