অন্তর্বর্তী সরকারের মূল অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হতে বিশ্বব্যাংক প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ঢাকা সফররত সংস্থাটি ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তেজগাঁও কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অর্থনীতির সমস্যা কাটিয়ে ওঠা, দুর্নীতি দূর করা এবং বিচারব্যবস্থার মতো ক্ষেত্রগুলোতে মৌলিক সংস্কার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়াসে ব্যাপকতর সহায়তার জন্য প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত।
রাইজার বলেন, বিশ্বব্যাংক সরকারের সংস্কার এজেন্ডা দেখে ‘উচ্ছ্বসিত’। তিনি মনে করেন, এখন বাংলাদেশ সফর করা মূল্যবান।
তিনি বলেন, অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। বিশ্বব্যাংক ব্যাংকিং, কর, শুল্ক, ভ্যাট, ডিজিটাইজেশন, দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপে সংস্কার প্রয়াসে সহায়তা করতে প্রস্তুত।
ড. ইউনূস বিশ্বব্যাংকের সহায়তাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতি থেকে মুক্তি পেতে এবং একটি নতুন যাত্রার সূচনা করতে জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক ম্যান্ডেট পেয়েছে। এটি সংস্কারের মৌসুম। আমরা এখনই শুরু করতে চাই।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থান বিদ্যমান ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কারের জন্য মাঠ প্রস্তুত করেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা পেছনে ফিরে যেতে চাই না। এ আন্দোলন অতীতকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন এটি একটি পরিচ্ছন্ন স্লেট।
ড. ইউনূস তার সরকার এখন পর্যন্ত যেসব সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে তার রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পদক্ষেপগুলোর মধ্যে দুর্নীতি, শ্রম সংস্কার এবং যুব সমাজের উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। সরকার শ্রম সংস্কারে আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন করবে, যা বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে এবং স্থানীয় উৎপাদনকারীদের আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্থান পেতে সহায়তা করবে। আমরা এ কাজটি সম্পন্ন করতে চাই।
সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পদক্ষেপের প্রশংসা করে রাইজার বলেন, বাংলাদেশে বার্ষিক এফডিআই দেশের জিডিপির প্রায় অর্ধ শতাংশ এবং এই অঞ্চলে এটি সর্বনিম্ন। বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গা মানবিক সংকট এবং কক্সবাজারের স্বাগতিক জনগোষ্ঠীর জন্য ৭০ কোটি ডলার অনুমোদন করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা লাখ লাখ তরুণ-তরুণীর জন্য তিনি সহায়তা লাভের বিষয়ে আগ্রহী। বলেন, আমাদের এই বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক প্রধান লামিয়া মোরশেদ, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ।